কটানা এক মাস আটদিন বন্ধ থাকার পর বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে চালু হলো আমদানি বাণিজ্য। বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ ছিল দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি। প্রথম দিনে ভারত পণ্য রপ্তনি করতে পারলেও বাংলাদেশ কোনো পণ্য রপ্তানি করতে পারেনি ভারতে।
বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টার সময় বেনাপোল-পেট্রাপোল লিংক রোডের নোম্যান্সল্যান্ডে ভারতীয় ভুট্টা, পান, পাট ও মেসতার বীজবোঝাই প্রথম তিনটি ট্রাকে আসা এসব পণ্য ভারতের ট্রাক থেকে বাংলাদেশি ট্রাকে লোড করা হয়।
এ সময় বেনাপোল কাস্টমস, বন্দর, বিজিবি, পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোক উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার লোকজনও উপস্থিত ছিলেন।
পণ্যচালানগুলোর বাংলাদেশের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান উৎস এন্টারপ্রাইজ এবং ভারতের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বন্ধন এগ্রো। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ড ডিএসইম পেসকো ও সোনারগাঁও নামে দুটি প্রতিষ্ঠান।
আমদানিকারক উৎস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী উজ্জ্বল রায় বলেন, প্রায় এক মাস আটদিন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর আমদানি বাণিজ্য চালু হলো। সময়মতো আমাদের এ পচনশীল মাল যদি গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারি তাহলে লোকসান গুনতে হবে। বেনাপোল কাস্টমস, বন্দর ও ব্যবসায়ীপ্রতিষ্ঠানগুলো ভারতের ব্যবসায়ী নেতা ও কাস্টমস, বন্দরের সাথে বসে বিশেষ ব্যবস্থায় এ পণ্য আনা হচ্ছে। তবে ভারতীয় কোনো পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করছে না। ভারতীয় ট্রাক থেকে বাংলাদেশি ট্রাক বেনাপোল-পেট্রাপোল নোম্যান্সল্যান্ড থেকে লোড করে নিয়ে আসছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শামিম হাসান বলেন, দীর্ঘদিন পর বৃহস্পতিবার আবার আমদানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে। পচনশীল পণ্য হিসেবে ভুট্টা, পাট ও মেসতা বীজ এবং পান জাতীয় পণ্য এসেছে। এগুলো বন্দরে নিয়ে আজই পরীক্ষণ শেষে শুল্কায়ন করা হবে এবং শুল্কায়নের পর পণ্য নিয়ে যাবে নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন. আমরা বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কিছু আমদানি পণ্য নিয়ে আসতে পেরেছি। এরপর আস্তে আস্তে আরও পণ্য বৃদ্ধি পাবে। ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় আড়াই হাজারের মতো পণ্যবাহী গাড়ি আটকে আছে। আমরা সেগুলো পর্যায়ক্রমে নিয়ে আসব। যারা এখানে কাজ করছে তাদের মাস্ক ও পিপিইর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে স্বাস্থ্যকর্মীরাও রয়েছে। প্রথমদিন একটু সমস্যা হবে। পরে সব ঠিক হয়ে যাবে।
গত ২২ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। বুধবার আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চালুর বিষয়ে বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে দুই দেশের বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার প্রথম কয়েকটি চালান দেশে প্রবেশ করেছে। ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে করোনার এ দুর্যোগের সময়েও ভারত থেকে শুরু হলো আমদানি। এতে করে সীমিত আকারে হলেও উপকৃত হবেন আমদানিকারকরা।