বরগুনার তালতলীতে সাত বছরের কন্যা সন্তানকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মাকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। ৩০ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা নিয়েছে।
আর ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার উপজেলার শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত এলাকায়।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর এলাকার হাতেম আলী খলিফার মেয়ে। এক সন্তানের এই মা তার শ্বশুর এলাকা পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থেকে আসার সময় পাথরঘাটা খেয়া পার হয়ে তালতলীর শুভসন্ধ্যা ঘাটে ওঠেন। ওখান থেকে নিশানবাড়িয়া খেয়াঘাট যাওয়ার জন্য স্থানীয় জহিরুলের মটর সাইকেলে ওঠেন। জহিরুল মটরসাইকেলে ওই নারীকে নিয়ে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের গহীন জঙ্গলে যায়। পরে অভিযুক্ত জহিরুল ফোন করে এমাদুল, নজরুল, সোহাগ, সাইদুল নামের চার বখাটে সহযোগী ওই স্থানে নিয়ে আসেন। এরপর সবাই মিলে শিশু মেয়েটিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে ওই মাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এতে করে ওই নারী জ্ঞান হারালে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরে জ্ঞান ফিরলে পাশ্ববর্তী লোকজনের কাছে আশ্রয় চাইলে তারা মা-মেয়েকে অন্য মটরসাইকেলে করে নিশানবাড়িয়া খেয়াঘাট পৌঁছে দেন।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, ‘ওই দিন সকাল ৮টার দিকে শশুর বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে পাথরঘাটা পৌঁছাই। সেখান থেকে ট্রলারে করে ১০টা দিকে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের শুভসন্ধ্যা তেতুলবাড়িয়া লঞ্চ ঘাটে নামি। তারপর এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে নিশানবাড়ীয়া খেয়াঘাট যাওয়ার চুক্তি করলে আমাকে নিশানবাড়ীয়া খেয়াঘাট না নিয়ে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে মটর সাইকেল চালক মোবাইলে আরো চারজনকে ডেকে আনেন। তারপরে ওরা সবাই মিলে আমার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে খুন করার ভয় দেখিয়ে আমাকে সকাল ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তারা আমাকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। আমার জ্ঞান ফেরার পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অন্য মটর সাইকেল যোগে নিশানবাড়িয়া এসে খেয়া পার হয়ে বাড়ীতে পৌঁছাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘লোকলজ্জার ভয়ে আমি কোথাও অভিযোগ করিনি। কিন্তু বিষয়টি ব্যাপক ভাবে জানাজানি হওয়ায় আমি থানায় এসে বিচার চাইতে বাধ্য হই।’
স্থানীয়রা জানান, মটর সাইকেল চালক জহিরুল ১০টার দিকে ওই নারীকে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে এমাদুল, নজরুল, সোহাগ, সাইদুল ও জঙ্গলের দিকে যায়। বিকাল ৪টার দিকে ওই নারী রাস্তায় এসে জনসম্মুখে উক্ত ঘটনা প্রকাশ করেন। এরপর আমরা অন্য মটরসাইকেলে করে তাকে নিশানবাড়িয়া খেয়াঘাটে পাঠিয়ে দেই।
এ বিষয়ে তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ‘ভুক্তভোগী নিজেই থানায় এসেছেন। তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।’