Header Border

ঢাকা, সোমবার, ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল) ২৫.০৮°সে
শিরোনাম
জাতিসংঘে ড. ইউনূসের ভাষণ : শক্তিশালী অর্থনীতি এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলাই মূল লক্ষ্য তানজিম হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে– নাহিদ ইসলাম গণহত্যা নিয়ে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক হোয়াইট হাউসের বিবৃতি, বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা অনুদান সীমান্ত হ/ত্যা/র ব্যাপারে কড়া প্রতিবাদ বিজিবির গণমাধ্যমকে ঢেলে সাজানো হবে- তথ্য উপদেষ্টা জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. ইউনূস, সম্পাদক মুগ্ধর ভাই স্নিগ্ধ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য  অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী ইউজিসির নতুন সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান ও ড. আনোয়ার হোসেন

লাশ হয়ে বাড়ী ফিরলো দিনমজুর সোহেল

ঢাকার সাভার এলাকায় কাজ করতে যেয়ে করোনা ভাইরাসের লকডাউনে আটকা পড়ে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের ৩৫ জন দিন মজুর। টাকার অভাবে বাড়ীতে আসতে পারছিলনা তারা। এলাকার সাংসদের কাছে ফোন করে বাড়ী আসার ব্যবস্থা করলেও লাশ হয়ে ফিরলো সোহেল নামের এক দিনমজুর।

এক দিনমজুরের না খেয়ে থাকা অবস্থায় খাবার কিনে বস্তিতে ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইসরাফিল আলমের ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা লেখা থেকে হুবুহু নেওয়া এই লেখাটি। ছেলেটির নাম সোহেল। জন্মস্থান নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের জালালাবাদ গ্রামে। ওরা ৩৫জন খেটে খাওয়া মানুষ জীবিকার সন্ধানে গিয়েছিলো সাভার হেমায়েতপুরে।

করোনা ভাইরাস জনিত মহামারীর কবলে পড়ে স্তব্ধ হয়ে যায় তাদের কর্মমুখর জীবন। সেই সাথে থেমে যায় তাদের জীবিকার পথ। ওদের মধ্যে উদ্যোমী এবং অনেকটা দলনেতা প্রকৃতির আরেক যুবক সাগর সর্দার আমাকে ফোন করে জানালো “আমরা আপনার নির্বাচনী এলাকার জালালাবাদ গ্রামের বাসিন্দা, সাভার হেমায়েতপুরে কাজ করতে এসেছিলাম। লকডাউনের কারণে ঘর থেকে বের হতে পারি না। তাই কাজ বন্ধ জমানো টাকা পয়সাও শেষ। গত মঙ্গলবার সারাদিন আর সারারাত না খেয়ে আছি আমরা। এখানে থাকলে না খেয়ে মারা যাবো। তাই অনুরোধ করছি আঙ্কেল আমাদেরকে সাহায্য করেন, আমরা গ্রামে ফিরে যেতে চাই। কথা বলে জানলাম ওরা নওগাঁর একটি ট্রাকের সাথে যোগাযোগ করেছে। ট্রাকটি কাঁচা তরিতরকারিসহ কাওরান বাজার গেছে। ফেরার পথে ওদেরকে নিয়ে নওগাঁ এসে নামিয়ে দেবে। এখন তাদের জীবন রক্ষা করতে খাবারের জন্য ৫হজার টাকা দরকার। আমি ওদের দেওয়াা বিকাশ নাম্বারের মাধ্যমে ৫হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়ে বললাম দ্রুত গ্রামে ফিরে আসো এখানে ইরি ধান পেকে গেছে, কেটে ঘরে তোলার জন্য অনেক মানুষ দরকার। তারা টাকা পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। ওদের মধ্যকার এক বৃদ্ধ চাচা আবেগাপ্লুত হয়ে আমার সাথে কথা বললো। সাগরসহ দুইজন ওই টাকায় বাজার করে বস্তিতে ফিরছিল। রাস্তা ছিল ফাঁকা। রাস্তাটি পার হওয়ার সময় পেছন থেকে একটি দ্রæতগামী মাইক্রোবাস এসে ধাক্কা দিয়ে এক জনকে রাস্তার ধারে ছিটকে ফেলে দেয়। সোহেলের মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগে।

ওরা তাৎক্ষণিক ছেলেটিকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চলে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ভর্তি করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করে। আমি টেলিফোনে অনুরোধ করার পর ডাক্তার তাকে ভর্তি করতে ও চিকিৎসা দিতে রাজি হয়। কিন্তু তিন ব্যাগ জরুরী রক্তের প্রয়োজনের কথা আমাকে জানায়। আমি রক্ত ও কিছু ওষুধ কেনার জন্য আবার ১০হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে সাগর সরদার এর কাছে পাঠিয়ে দিই এবং চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকি। ইতিমধ্যেই রাণীনগর থানার ওসি সাহেবের সাথে ওদের যোগাযোগ করিয়ে দিই, যাতে রাস্তায় আসার পথে কোন ঝামেলায় পড়তে না হয়। ইফতারের প‚র্ব ম‚হ‚র্তে জানতে পারি ছেলেটি মৃত্যুবরণ করেছে। ডাক্তার সাহেবের সাথে কথা বলে অ্যাম্বুলেন্সে মাধ্যমে দ্রুত লাশ তার বাবা-মার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। উনারা টাকা চাইলে আবারো ১০হাজার টাকা পাঠিয়ে দিই যুবলীগ নেতা ফিরোজ এর মাধ্যমে। পথ খরচের জন্য পরবর্তীতে আরো ২হাজার টাকা পাঠিয়ে দিই। আজ মৃত ছেলে সোহেল তার বাবা-মা ও আপনজনদের কাছে ফেরত এলো লাশ হয়ে। অথচ আসার কথা ছিল পকেট ভরা টাকা আর হাসিখুশি মনে। কারণ রমজানের কয়দিন পরে ঈদের উৎসব আনন্দ। সোহেলের মৃত্যু বড়ই বেদনার।

সে বাড়ি ছাড়া হয়েছিল নিজে বাঁচতে এবং পরিবার-পরিজনকে বাঁচাতে জীবিকার তাড়নায়। করোনা ভাইরাসের কারণে তাকে প্রথমে হতে হলো কর্মচ্যুত। তারপর আয় উপার্জন হয়ে গেল বন্ধ। বন্ধ হয়ে গেলো তার জীবিকার চাকা। তারপর পুরো একটি দিন ও রাত অভ‚ক্ত থাকা। আর সেই অভুক্ত অবস্থায় শেষ বিদায় নিয়ে এই পৃথিবী থেকে তার প্রস্থান। দেশে কত খাবার, কত অর্থ-সম্পদ আর ধর্ণাঢ্য মানুষের বসবাস হেমায়েতপুর-সাভারের জনপদে। কিন্তু সেখানেই থাকতে হয় কত মানুষকে অভুক্ত। আবার সেখান থেকেই ফিরে আসতে হচ্ছে নিরুপায় মানুষগুলোকে নিজ গ্রামে শুধু মাত্র বেঁচে থাকার আকাঙ্খাকে বুকে নিয়ে।

একটু ভেবে দেখুন তো বন্ধুরা! সামান্য কদিনের প্রতিক‚ লতার মধ্যেই কি নিদারুণ বিপন্ন হয়ে গেছে, আমাদের সভ্যতা সমৃদ্ধি আর প্রবৃদ্ধি অহংকার। এখনো অনেক দ‚র যেতে হবে আমাদের একটি ক্ষুধামুক্ত মানবিক সমাজ বিনির্মাণের জন্য- যে সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিতে হয়েছে ৩০ লক্ষ মানব সন্তানকে। জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ উৎসর্গ করতে হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মা-বোনদেরকে। স্বপরিবারে জীবন দিতে হয়েছে এই রাস্ট্রের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় নিহত হতে হয়েছে চার জাতীয় নেতাকে। নিজের এলাকার এক দিনমজুরের না খেয়ে মরে যাওয়ার বিষয়ে এভাবেই মনের আবেগকে ফেইসবুকের মাধ্যমে প্রকাশ করেন নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইসরাফিল আলম।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

শিক্ষা উপদেষ্টার জরুরী সংবাদ সম্মেলন
বৃত্তিমূলক কাজে নিয়োজিত পেশাদার ব্যক্তিদের দিয়ে শ্রেণীকক্ষে শেখানোর সুপারিশ
প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনের ফলে কর্ম জগতের ধারণা পাল্টে যাচ্ছে: শিক্ষামন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর পথে হেঁটে মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করুন: রাশেদা কে চৌধুরী
সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করলে খুব একটা খরচ বাড়বে নাা: শিক্ষামন্ত্রী
বই উৎসব: প্রাথমিকের ঢাবিতে, মাধ্যমিকের গাজীপুর

আরও খবর

ডিজাইন ও ডেভেলপঃ আবদুল্লাহ আল মাসুদ